বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শাহরিয়ার মিল্টন, শেরপুর :
শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুর জেলা শহরের পৌরসভার গৌরীপুর মহল্লার বাসিন্দা মো. তোফাজ্জল হোসেনের বিবাহিত মেয়ে মোছা. তাহমিনা ইয়াছমিন (৩৪) কর্তৃক সি.আর আমলী আদালতে চলতি বছর ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকালে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত মামলার আসামী ও ভুয়া নিকাহ্ রেজিস্ট্রার মাওলানা রাজু আহাম্মেদকে শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। রাজু আহাম্মেদ শেরপুর পৌরসভার মোবারকপুর মহল্লার মো. আফতাব উদ্দিনের ছেলে। আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর জেলা শহরের পৌরসভার গৌরীপুর মহল্লার বাসিন্দা মো. তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে সরকারি চাকুরীজীবী মোছা. তাহমিনা ইয়াছমিনের সাথে একই মহল্লার মো. আব্দুল হাকিমের ছেলে আবুল হাসনাত মো. রানা বিগত ২০০৫ সালের ৩০ মে রেজিঃ কাবিন মূলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় স্বামী আবুল হাসনাত মো. রানাকে নগদ ৩ লাখ টাকাসহ আসবাবপত্র দেয়া হয়। এদিকে বিয়ের পর মোছা. তাহমিনা ইয়াছমিন ও আবুল হাসনাত মো. রানা দম্পত্তির সংসারে এক পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। সরকারি চাকুরীজীবী স্ত্রী তাহমিনা ইয়াছমিনের পিত্রালয় থেকে যৌতুক লোভী স্বামী আবুল হাসনাত মো. রানা পুনরায় বিগত ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর ৫ লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য তার স্ত্রীকে চাপ প্রয়োগ করে। এসময় স্ত্রী তাহমিনা ইয়াছমিন যৌতুকের টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে শারীরিক নির্যাতন, মারধোর ও জখম করে পাষন্ড স্বামী আবুল হাসনাত মো. রানা। এঘটনায় নির্যাতিতা স্ত্রী তাহমিনা ইয়াছমিন নিরুপায় হয়ে শেরপুরের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে যৌতুক লোভী স্বামী রানার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৬৩৮/২০২১, জি.আর নং ৯২০/২০২১। এতেও ক্ষান্ত থাকেনি ওই পাষন্ড স্বামী হাসনাত মো. রানা। হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে সে পৌরসভার ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের বর্তমান দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ভুয়া কাজী রাজু আহাম্মেদকে দিয়ে ভূয়া ও জাল তালাক নামা সৃজন করে স্ত্রী তাহমিনা ইয়াছমিনকে তালাক দেয়। তালাক নামা পেয়ে তাহমিনা ইয়াছমিনের বাবা মো. তোফাজ্জল হোসেন তৎকালিন জেলা রেজিঃ মো. হেলাল উদ্দিনের কার্যালয়ে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী ওই নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের নাম নেই এবং সে বৈধ নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হিসেবে গণ্য নয়। পরে ভুক্তভোগী মোছা. তাহমিনা ইয়াছমিন বিগত ২০২২ সালের ৩১ জুলাই ওই ভূয়া কাজী মাওলানা রাজু আহাম্মেদ ও তার স্বামী আবুল হাসনাত মো. রানাসহ অপরাপর ৭ জনকে আসামী করে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৮২০/২০২২। আদালত এ মামলা সিআইডিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। পরে তদন্তে মাওলানা রাজু আহাম্মেদ ভুয়া কাজী হিসেবে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। এরপর থেকেই রাজু আহাম্মেদ পলাতক থাকে এবং তার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। পরে সে মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে তার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন চাইলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন নাকচ করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অপরদিকে ওই ভুয়া কাজী রাজু আহাম্মেদের বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে একটি মামলায় গত ২৪-৯-২০২৩ ইং তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক কামরুল হাসান তাকে ৬ মাসের কারাদÐ এবং সেই সাথে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদÐে দÐিত করেন। এ মামলায় দÐপ্রাপ্ত হওয়ার পর ভুয়া কাজী মাওলানা রাজু আহাম্মেদ পলাতক থাকেন বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।